চাঁদাবাজের দল - লেখক জামিল

চাঁদাবাজের দল

লেখকঃ জামিল


দেশটা আজ মগের মুল্লুক

হয়ে গেছে ভাই,

কোথায় যাবো কোথায় যাবো

শান্তি কোথাও নাই।



এই দেশেতে ছিলো আগে

স্বৈরাচারীর দল,

চারপাশে আজ দেখি শুধুই

চাঁদাবাজের দল।



নাই নাই নাই উপায় যে নাই

নাই যে করার কিছু?

চাঁদাবাজের দলে মোদের

ছাড়ে না রে পিছু।



দিন-দুপুরে পথে ঘাটে

তাদের শুধু দেখি,

এই দেশেতে দেখার মতো

আর কিছু নাই বাকি।



চাঁদার লাগি তারা মোদের

পিছু পিছু আসে,

না দিলে ভাই চাঁদা ওদের

ঘাড়ে চেপে বসে।



সবখানেতে মার খেলো রে

আমজনতার দল,

মার দিয়েছে মার দিয়েছে

চাঁদাবাজের দল।



বাপ-দাদাও ছিলো তাদের

স্বৈরাচারের চ্যালা,

তাদের গলায় পরিয়ে দে

পঁচা ঘুটের মালা।



স্বৈরাচারের জোরে তাদের

বাহুতে ছিলো বল,

দেশটা আমার ঘিরেছে আজ

চাঁদাবাজের দল।



জগৎ জুড়ে মার খেয়েছে

নিরীহ দূর্বল,

কে মেরেছে কে মেরেছে?

চাঁদাবাজের দল।



আমজনতার পেটে ওরা 

নিত্য মারে লাথি,

আমার দেশের রাজা ওদের

সুখের দুখের সাথী।



যেথায় যাই চোরের দলে

আসে পিছু পিছু,

রাজাও চায় তাদের কাছে

চাঁদা কিছু কিছু।



চাঁদার লাগি করে ওরা

নিত্য অনশন,

ওদের ভয়ে চুপসে গেছে

দেশের জনগণ।



জনতা আজ ভুলে গেছে

করতে প্রতিবাদ,

সব কিছু আজ সয়ে গেছে

ভেঙে গেছে বাঁধ।



পথে ছুটে আসে না আর

আমজনতার ঢল,

চাঁদাবাজের দলে এখন

বৈধ চোরের দল।



দেশটা আমার নাশ করিলো

চোর ডাকাতের দল,

তাদের সাথে লুটছেও তাই

চাঁদাবাজের দল।



দেশটা এখন চাঁদাবাজের

আমরা থাকি ভাড়া,

বীরের জাতি বাঘের মতো

দেয় না রে আর সাড়া।



থমকে গেছে বীরের জাতি

হয়ে গেছে চুপ,

তোরা কেহ তাদের নিয়ে

করিস না বিদ্রুপ।



জনতা আমার বড়ই ভালো

নয় রে তারা খারাপ,

এই দেশেতে জন্মে তারা

করেছে ভাই পাপ।



নইলে আমার সোনার দেশে

চোরে কি হয় রাজা?

মজলুম কে দেয় পায়ে ঠেলে

গদির জোরে সাজা।



দেশটা আমার গ্রাস করেছে

স্বৈরাচারের দল,

কে লুটিলো কে লুটিলো?

চাঁদাবাজের দল।



দেশটা চল ওদের দিয়ে

আমরা যাই চলে,

চাঁদাবাজি করুক ওরা

চোর ডাকাতের দলে।



ওদের টুটি চেপে যদি

ধরিতে না পারি,

দেশটা চল আমরা তবে

তাড়াতাড়ি ছাড়ি।



দুদিন ঘরে থাকলে পড়ে

আমার কোনো ভাই,

তার ঘরেতে এসে তারা

বলে চাঁদা চাই।



চাঁদা যেনো চোরের দলের

ন্যায্য অধিকার,

এই দেশেতে চাই না মোরা

চোরের তাবেদার।



রাজাও আজ চোরে দলে

লিখিয়েছে নাম,

চাঁদাবাজের থেকে সে পায়

কোটি টাকা দাম।



রাজা রে কর জয়ধ্বনি

বল রে হরিবোল,

দেশটা আমার লুট করিলো

রাজার চোরের দল।



চাঁদাবাজের দলগুলো শোন

কানটা খুলে রেখে,

দেশটা বল তোদের নামে

কে দিয়েছে লিখে?



প্রভুর দেওয়া দেশটা কি

তোদের কারো বাপের?

আমলারা দেখ গুছিয়েছে

ওদের সাধের আখের।



তোদের গলা চেপে ধরে

খাচ্ছে তারা লুটে,

দেনা আরো জিতিয়ে তাদের

তোদের দামী ভোটে।



বোকার দেশে নীতি কথা

বিলাসীতা যেনো,

এই দেশেতে ভালো মানুষ

থাকবে রে ভাই কেনো?



আমার দেশের ভাইবোনেদের

কারে কি আর বলি?

চাঁদাবাজে সব দিয়ে দে আজ

ঘরটি করে খালি।



দুদিন পরে দেখবি তোর

ঘরে কিছু নাই,

গলা ছেড়ে তখন তোরা

কাঁদিস না কেউ ভাই।



কোন সে হাঁদা গাঁধার গাঁধা

তোর কাছে চায় চাঁদা?

কর্ম তাকে শেখায় নি কি

ওদের বাপে দাদা?



হাত থাকিতে পা থাকিতে

কর্মে যদি ডর,

চাঁদাবাজি ছেড়ে তবে

ভিক্ষার পথ ধর।



চাইলে চাঁদা দিবি তারে

গণ অভিশাপ,

চাঁদাবাজের দলগুলো সব

বিষে ভরা সাপ।



এই সাপেতে দংশিলো রে

আমার সাধের দেশ,

চাঁদাবাজের দলে আমার

দেশ করিলো শেষ।



শুনেছিলাম সাপের মাথায়

থাকে মুক্তো মণি,

আমার সোনার দেশটা পেলো

চাঁদাবাজের খনি।



চোর ডাকাতের দোসর তারা

মহাপাপীর দল,

হে প্রভু তুমি করো আমার 

দেশ জাতির মঙ্গল।



কোনো দেশে নাহয় যেনো

এমন সোনার চোর,

চোরগুলো সব দেশের মানুষ

করেছে মারধর।



নিজের দামী ভোটটা দেয়

যারা চোরের দলে,

চোরের সাথে সন্ধি তারা

করে তলে তলে।



আবেগী এই দেশ জনতার

জাগবে বিবেক কবে?

প্রভু তুমি এমন মানুষ

দিয়ো না আর ভবে।



দআবেগটা তোর খুবই ভালো

সবখানেতে নয়,

বিবেক দিয়ে কাজ করিলে

তোরি হবে জয়।



একবার দেখ ভেবে রে তুই

কি করলি দেশের তরে?

প্রভুর কাছে বলবি কি তুই

এখন গেলে মরে?



শুধরে নে আজ নিজেরে তুই

পরেতে না ডরে,

তোর জন্ম হয়েছে কি

চাঁদাবাজের ঘরে?



শ্রেষ্ঠ তুই জগৎ মাঝে

বিবেক দিলো খোদা,

পরের পা চাটিস যদি

আস্ত তুই গাধা।



দেশের লাগি করবি কবে

মরবি কবে বল?

দেশটা তোর লুটিলো ওই

চাঁদাবাজের দল।



নয়ন দুটি মেলিয়া দ্যাখ

মনে এনে বল,

তোর ঘরেতে ঢুকেছে আজ

চাঁদাবাজের দল।



দেশটা আমার কে লুটিলো

কে লুটিলো বল?

দেশটা আমার লুটিলো ওই

চাঁদাবাজের দল।



কে লুটিলো কে লুটিলো

বল রে তোরা বল?

দেশটা আমার লুটিলো ওই

স্বৈরাচারের দল।



দেশটা আমার ভালোবাসার

শেষটুকু সম্বল,

প্রভু তুমি নাশ করো ওই

চাঁদাবাজের দল।


রচনাকাল: ১০ আশ্বিন ১৪৩০।

©2024 By author Jamil


লেখক পরিচিতি: আমার জন্ম ১৯৯৭ সালের ২৪শে ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ জেলায়। আমি ঢাকা কলেজে স্নাতক পড়াশোনা করেছি। আমার লেখা এই "চাঁদাবাজের দল" কবিতাটি আমার "খাই খাই" কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত একটি কবিতা। আমার এই খাই খাই কাব্যগ্রন্থটি ছাড়াও আরও অনেকগুলো গ্রন্থ রচনা করেছি আমি। মোট ১৯ টি গ্রন্থ রচনা করেছি। তিনটি এডভেঞ্চার উপন্যাস, একটা সামাজিক উপন্যাস, ৯টি কাব্যগ্রন্থ(এর মধ্যে দুইটি শিশুতোষ কাব্যগ্রন্থ), তিনটি নাট্যগ্রন্থ, একটি প্রবন্ধগ্রন্থ, একটি গল্পগ্রন্থ সহ আরও বেশ কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেছি। 

"চাঁদাবাজের দল" কবিতাটি আমার সম্পুর্ন মৌলিক সৃষ্টি। আমি এই কবিতাটি প্রথম ২০২৩ সালে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রচনা করেছি। আওয়ামী লীগের চাঁদাবাজদের উদ্দেশ্যে রচনা করেছিলাম। কবিতাটি তখন আরো সরাসরি ও তীক্ষ্ণ ভাষায় রচনা করেছিলাম। কিন্তু ২০২৪ সালের শুরুর দিকে এটিকে আরো পরিমার্জন, সংশোধন ও সংযোজন করি। তখন আমার এই কবিতাটিতে আমি কোনো দলের নাম উল্লেখ করেছিলাম না। তখন শুধু এই কবিতাটিতে চাঁদাবাজের দল শব্দটিই পুরো কবিতায় উল্লেখ করেছিলাম। কিন্তু তখন তো এটা বুঝতে পারি নি যে, ২০২৫ সালে বিএনপি আমার লেখা এই কবিতার সেই চাঁদাবাজদের ভূমিকা পালন করবে। আপনারা কেউ যদি আমার এই কবিতাটি নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল কিংবা পেজে ব্যবহার করতে চান, তাহলে আপনারা নির্দ্বিধায় ব্যবহার করতে পারেন। তবে এই কবিতার প্রথম ৩০ স্তবক আপনারা আপনাদের যেকোনো সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল কিংবা পেজ, ইউটিউব চ্যানেল অথবা আপনাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রে সেই পোস্টের নিচে আমার এই ওয়েবসাইট থেকে এই কবিতাটির লিঙ্ক সেখানে শেয়ার করতে হবে। ৩০ স্তবকের বেশি প্রকাশ করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। তবে আপনারা কেউ যদি এটি কোনো থিয়েটার, কোনো সভামঞ্চ কিংবা নাট্যমঞ্চ কিংবা কোনো গণ অভূত্থান বা আন্দোলনে আবৃত্তি করতে চান অথবা ব্যবহার করতে চান, তাহলে সেক্ষেত্রে আপনারা সম্পুর্ন কবিতাটি ব্যবহার করতে পারবেন। যদি কেউ এই কবিতাটির কোনো কোনো স্তবক বা লাইন কিংবা অংশবিশেষ Quote হিসেবে ব্যবহার করতে চান, তবে সেক্ষেত্রে অনুগ্রহ করে লেখকের নামটা উল্লেখ করবেন। নতুবা কেউ যদি এর ব্যাত্যয় করেন, তাহলে সেটা আইনত কপিরাইট লংঘন বলে পরিগনিত হবে। কারণ, এই কবিতাটির সর্বস্বত্ত লেখক জামিল কর্তৃক সংরক্ষিত।

Comments

Popular posts from this blog

আপনি কি বাঁচতে চান নাকি মরতে চান